Whatsaap

07 July 2022

ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া। স্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষাকেন্দ্রিক শিক্ষাচর্চা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।

ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া। স্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষাকেন্দ্রিক শিক্ষাচর্চা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।


প্রশ্নঃ ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া। স্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষাকেন্দ্রিক শিক্ষাচর্চা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।

উত্তরঃ ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির স্বার্থরক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষাকেন্দ্রিক শিক্ষাচর্চার বিষয় আলোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই ওয়ারেন হেস্টিংসের নাম উল্লেখ করতে হয়। তিনি এ বিষয়ে এক বিশেষ ধরনের শিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

ফারসি ও অন্যান্য ভাষা জানা ভারতীয়দের তিনি রাজস্ব দপ্তরের কাজে নিয়োগ করেছিলেন। কোম্পানির কর্মচারীদের সুবিধার জন্য হিন্দু ও মুসলিম আইনগুলিকে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন হেস্ট্রিংস । অন্যদিকে কোম্পানির বিভিন্ন নিয়মনীতিগুলোকেও বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে আরবি ও ফারসি ভাষাচর্চার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে জোনাথন ডানকান হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। উভয়েরই মূল উদ্দেশ্য ছিল ওই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষিত ব্যক্তিরা উপনিবেশিক শাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে সুগঠিত করার কাজে সহায়তা করবেন। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উইলিয়ম জোনস। তাঁর উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য ছিল সংস্কৃত ভাষায় লেখা প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যগুলি আধুনিক ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করা। তাঁর মতে এই চর্চার ফলে ভারতের শিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে ব্রিটিশদের বোঝাপড়া অনেক সুষম হবে এবং ঔপনিবেশিক পবশাসন আরও সুগম হয়ে উঠবে। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ব্যাপ্টিস্ট মিশন স্থাপন করা হয়। ওই মিশনের মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছিলেন উইলিয়ম কেরি । তিনি ভারতীয় মহাকাব্যগুলি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। তা ছাড়া বাইবেলের একটি অংশ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করেন।

১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার ডাফ কলকাতায় অনেকগুলি মিশনারি স্কুল তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন যার মধ্যে বিখ্যাত ছিল জেনারেল অ্যাসেম্বলি ইনস্টিটিউশন।

১৮২১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সংস্কৃত সাহিত্যের চর্চার পাশাপাশি পাশ্চাত্য জ্ঞানের বিকাশ ঘটানো।

১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ইংরেজি ভাষা নির্ভর পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্রুত বিস্তার ঘটতে থাকে। ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে একটি প্রতিবেদনে সরাসরি বলা হয় যে, ইংরেজি শিক্ষার বিস্তারে প্রশাসন বেশি জোর দেবে। ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে সরকারি চাকুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষাজ্ঞানকে আবশ্যক বলে ঘোষণা করা হয়। ইংরেজি ভাষাকেন্দ্রিক শিক্ষাচর্চা- নীতির পিছনে লর্ড মেকলের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেদনে মেকলে বলেন ভারতে ইংরেজি-শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করাই ঔপনিবেশিক প্রশাসনের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। উডের প্রতিবেদনও সরকারকে প্রাথমিক থেকে বিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত একটি সুগঠিত শিক্ষা কাঠামো গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়- শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ও ভারতীয় দু-ধরনের ভাষা চর্চার কথা বলা হয়েছে।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে একথাই প্রতিপন্ন হয় যে ঔপনিবেশিক প্রশাসনের তরফে গৃহীত শিক্ষাবিস্তার নীতির মূল উদ্দেশ্যই ছিল সমাজে কিছু সংখ্যক মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা, বিশেষ করে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়া।





অবশেষে, আমরা আশা করছি যে তোমরা সঠিক প্রশ্নের উত্তর পেতে সক্ষম হয়েছ। তোমরা আমাদের Youtube Channel-এ Visit করতে পারো, সেখানে আমরা প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সকল প্রশ্নের উত্তর PDF সহ দিয়ে থাকি।
Visit 👉 YouTube

যদি কারো সঠিক উত্তর পেতে কোনো রকমের অসুবিধা হয় সে আমাদের কমেন্ট করে জানাও।

0 comments:

Post a Comment

If you have any question, Please let me know.