Whatsaap

05 June 2022

ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে আত্মজীবনীমূলক উপাদানের ব্যবহার কত সমস্যাকর ব্যাখ্যা করো। ইতিহাস রচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের মতামত কী ছিল?

ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে আত্মজীবনীমূলক উপাদানের ব্যবহার কত সমস্যাকর ব্যাখ্যা করো। ইতিহাস রচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের মতামত কী ছিল?



প্রশ্নঃ ইতিহাসকে দেখা বা বিশ্লেষণ করাটা নির্ভর করে দেখা ও বোঝার ভঙ্গির ওপরে - বিবৃতিটির সপক্ষে তোমার যুক্তি দাও।

উত্তরঃ ইতিহাসকে দেখা বা বিশ্লেষণ করাটা নির্ভর করে দেখা ও বোঝার ভঙ্গির ওপর একথা যথার্থই সত্য। বিবৃতির সত্যতার যুক্তি হিসেবে ইতিহাসের অন্যতম উপাদান হিসেবে আত্মজীবনীর কথা উল্লেখ করা যায় ।

কারও আত্মজীবনী থেকে তাঁর সময়ের ইতিহাসের উপাদান খুঁজে পেতে হলে শুধু আত্মজীবনী ব্যবহার করলেই হবে না - কারণ যিনি আত্মজীবনী লিখেছেন, তিনি তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচারধারা থেকেই সব কিছু ব্যাখ্যা করেছেন। ঐতিহাসিক যদি সেই ব্যাখ্যা বিচার না করেই সমস্তটা মেনে নেন তাহলে তা একপেশে বা পুরো ভুল সিদ্ধান্তেও পৌঁছে যেতে পারেন। যেমন- উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন তাঁর লেখা অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমের জীবনীতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব হিউমকেই দিয়েছেন ৷ অথচ পরে দেখা গেছে যতটা কৃতিত্ব হিউমকেই দেওয়া হয়, আদৌ ততটা কৃতিত্বের দাবিদার হিউম নন। ঐতিহাসিক যদি শুধু ওয়েডারবর্নের কথাই মেনে নিতেন, তাহলে এই নতুন বিশ্লেষণ পাওয়া যেত না। সুতরাং বোঝা যায়, একজন ঐতিহাসিককে সমস্ত উপাদান যাচাই করে খুঁটিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ করে দেখতে হয়।

প্রশ্নঃ ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে আত্মজীবনীমূলক উপাদানের ব্যবহার কত সমস্যাকর ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ আধুনিককালে ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম অপরিহার্য উপাদান হল আত্মজীবনীমূলক রচনা। আত্মজীবনীগুলি থেকেই ওই ব্যক্তির/সম্রাট/শাসকের শাসনকাল, সমাজব্যবস্থা নানা দিক সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ পাওয়া যায় । এতদ সত্ত্বেও বলা যায় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ইতিহাস রচনায় বেশ কিছু সমস্যা তৈরি করে। যেমন-

১। দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যা: যিনি আত্মজীবনী লিখেছেন তিনি তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতে সবকিছু বিচার করেন বলে, সবসময়ে তা সমাজ ও সমসাময়িক কালের ইতিহাসের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারে না। 

২। সময়ের অভাব: যিনি আত্মজীবনী রচনা করেন অনেক সময় তার সময়ের অভাব বা অন্যান্য সমস্যা হেতু সমস্ত বিষয়ে সঠিক মূল্যায়ন হয় না, যা যথার্থ ইতিহাস রচনায় একটা অন্তরায় স্বরূপ।

৩ । ভুল নথি সংগ্রহ: আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থগুলিতে অনেক সময় ভুল নথির নজির লক্ষ্য করা যায় । যেমন- উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন তাঁর লেখা অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমের জীবনীতে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব হিউমকেই দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে গবেষণায় প্রমাণিত হিউম সমস্ত কৃতিত্বের একক দাবিদার নন। 

প্রশ্নঃ ইতিহাস রচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের মতামত কী ছিল?

উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র ভারতীয় ইতিহাসে যে সমস্ত বিষয়গুলি প্রাধান্য পেয়েছিল তা নিয়ে বিশেষ সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাঁর মত ছিল বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের বাঙালির ইতিহাস জানতে হবে। এমনকি তাঁর মতে এই ইতিহাস বাঙালিরাই রচনা করবে।

এই প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি ছিল যে, বিদেশিদের লেখা বাঙালির ইতিহাস ভুলে ভরা । তাই তিনি বাঙালির যথার্থ ইতিহাস পাওয়ার জন্য আমাদের মতো সাধারনকে উদ্যোগী হতে বলেছেন ৷ এ প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রের কপালকুণ্ডলা, দেবী চৌধুরানী প্রভৃতি ইতিহাসমূলক উপন্যাসগুলির কথা বলা যায় ৷ বঙ্কিমচন্দ্রের বক্তব্য ছিল ইতিহাসের বিষয়বস্তুতে বিদেশিদের হানাহানি-খুনোখুনির পরিবর্তে সাধারণ ভারতীয়দের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতির বিবরণ থাকলে তা অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে।


অবশেষে, আমরা আশা করছি যে তোমরা সঠিক প্রশ্নের উত্তর পেতে সক্ষম হয়েছ। তোমরা আমাদের Youtube Channel-এ Visit করতে পারো, সেখানে আমরা প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সকল প্রশ্নের উত্তর PDF সহ দিয়ে থাকি।
Visit 👉 YouTube

যদি কারো সঠিক উত্তর পেতে কোনো রকমের অসুবিধা হয় সে আমাদের কমেন্ট করে জানাও।




0 comments:

Post a Comment

If you have any question, Please let me know.